
মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : উৎসাহ-উদ্দীপনা, গভীর শ্রদ্ধা আর জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে উদযাপিত হলো মহান বিজয় দিবস-২০২৫। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগে দিনব্যাপী বিস্তৃত কর্মসূচির মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ এবং স্বাধীনতার ৫৪তম বৎসর ও ৫৫তম দিবসকে বরণ করে নিলো গোটা জেলা। জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফ-উজ-জামান-এর নির্দেশনায় এবং পুলিশ সুপার মোঃ হাবীবুল্লাহ-এর তত্ত্বাবধানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হয় সকল আয়োজন।

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫-এর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গোপালগঞ্জ ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির ঐতিহাসিক সূচনা করা হয়। এসময় সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ০৮:৩০টায় স্বাধীনতা ও বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে সর্বপ্রথম শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফ-উজ-জামান ও পুলিশ সুপার মোঃ হাবীবুল্লাহ। এরপর একে একে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জেলা পরিষদ, আনসার ভিডিপি, স্থানীয় রাজনৈতিক দল (যেমন, জেলা জাতীয়বাদী দল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন), সরকারি-বেসরকারি সংস্থা শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সকাল ৯টায় গোপালগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের অভিবাদন মঞ্চে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সুশৃঙ্খল কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে।

দিবসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন ছিল সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরের বধ্যভূমিতে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ৭১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের জমকালো সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
দিনের দ্বিতীয় ভাগে ছিল উৎসবের আমেজ। দুপুর ২:৩০টায় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও জাতীয় মহিলা সংস্থার আয়োজনে মহিলাদের জন্য হয় ক্রীড়ানুষ্ঠান। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় পৌরপার্ক প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সৌজন্যে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া, জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়। দিনটিকে আরও মানবিক করে তুলতে জেলার হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা এবং বৃদ্ধাশ্রমে পরিবেশন করা হয় উন্নত মানের বিশেষ খাবার।
